Search This Blog

Theme images by kelvinjay. Powered by Blogger.
আপনাকে আপডেট নিউজ এর সাথে পেয়ে আমরা আনন্দিত এবং আপনার সাথে সমস্ত আপডেট শেয়ার করতে আগ্রহী। পরবর্তী আপডেটের জন্য আমাদের সাথেই থাকুন।
» » ভূমিকম্প হওয়ার আগে করণীয়-

 বাংলাদেশ ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ভারতীয়, বার্মিজ ও ইউরেশীয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলের নিকটে অবস্থিত। এ কারণে দেশটি ভূমিকম্প ঝুঁকির উচ্চ অঞ্চলের তালিকায় রয়েছে। ২০১১ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশে বহু ভূমিকম্প ঘটেছে। EarthquakeList.org–এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে ৩০০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে গত ১০ বছরে প্রায় ৫৫৩টি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে, যার মাত্রা ছিলো ৪.০ বা তার বেশি । অর্থাৎ গড়ে প্রতি বছর প্রায় ৫৫টি ভূমিকম্প এই অঞ্চলে ঘটে থাকে।

২১ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ সকাল ১০টা ৩৮ মিনিট ২৬ সেকেন্ড হতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির মাত্রা ৫ দশমিক ৭ বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহওয়া অধিদপ্তর। সর্বশেষ পাওয়া তথ্য মতে, শিশুসহ ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হয়েছে অনেকে। জনবহুল নগরায়ন, অপরিকল্পিত নির্মাণকাজ এবং সচেতনতার অভাব ভবিষ্যতে এ ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি করছে। তাই ভূমিকম্প মোকাবিলায় বৈজ্ঞানিক গবেষণা, সচেতনতা বৃদ্ধি, দুর্যোগ সহনশীল অবকাঠামো ও জরুরি সাড়াপ্রদানের প্রস্তুতি অত্যন্ত জরুরি। তাই, আসুন জেনে নেই ভূমিকম্পের আগে, ভূমিকম্পের সময় এবং ভূমিকম্পের পরে আমদের ঠিক কোন বিষয়গুলোর উপর জোর দিতে হবে।



ভূমিকম্প হওয়ার আগে করণীয়-
১. ঝুঁকি চিহ্নিতকরণ
★ তাক, আলমারি ও শেলফ দেয়ালে শক্তভাবে আটকানো আছে কিনা নিশ্চিত করুন
★ ভারী বা বড় জিনিস নিচের তাকগুলোতে রাখুন।
★ কাঁচ, বোতলজাত খাবার ও ভঙ্গুর জিনিসপত্র নিচের দিকের লকযুক্ত কেবিনেটে রাখুন।
★ ভারী ছবি, আয়না বা দেয়াল সাজসজ্জার জিনিস বিছানা, সোফা বা বসার জায়গার ওপরে ঝুলাবেন না।
★ ছাদের লাইট, ফ্যান বা ঝাড়বাতি ভালোভাবে ব্রেস বা মজবুতভাবে লাগানো আছে কিনা নিশ্চিত করুন।
★ গ্যাস ও বিদ্যুতের লাইন পরীক্ষা করুন—কোথাও লিকেজ আছে কিনা দেখুন।
★ বড় আলমারি, বুকশেলফ ও কেবিনেট দেয়ালে আটকান।
★ ফাটল বা দুর্বল দেয়াল ঠিক করে নিন, কারণ এগুলো ধসে পড়তে পারে।
২. ঘর, স্কুল বা অফিসে নিরাপদ জায়গা শনাক্তকরণ
★ বিম ও কলামের সংযোগস্থলের নিচে অবস্থান - এটি সাধারণত ভবনের সবচেয়ে শক্ত অংশ।
★ মজবুত টেবিলের নিচে নিরাপদ অবস্থান- মজবুত টেবিলটি দেয়ালের কোণ বা শক্ত ভিতরের দেয়ালের পাশে রাখুন। এটি পড়ে যাওয়া জিনিস থেকে সুরক্ষা দেয়।
★ ত্রিভুজাকার নিরাপদ অবস্থান - ধসে পড়া জিনিসের পাশের খালি জায়গায় অবস্থান করা—যেখানে “লাইফ ট্রায়াঙ্গেল” তৈরি হয়।
★ দুটি দেয়ালের কোণ বা শক্ত ভিতরের দেয়ালের পাশে - এটি ধসে পড়া বস্তু থেকে সুরক্ষা দেয়।
৩. পরিবারের সবাইকে গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ কীভাবে বন্ধ করতে হয় সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিন
৪. জরুরি সরঞ্জাম যেমন টর্চলাইট ও অতিরিক্ত ব্যাটারি, প্রয়োজনীয় ওষুধ, জরুরি খাবার ও পানি, নগদ টাকা ও ব্যাংক কার্ড, ফার্স্ট এইড কিট প্রস্তুত রাখুন
৫. জরুরি যোগাযোগ পরিকল্পনা তৈরি করুন। ভূমিকম্পের সময় যদি পরিবার সদস্যরা আলাদা হয়ে যায়, তাহলে কোথায় পুনর্মিলিত হবেন, তার পরিকল্পনা করুন। এলাকার বাইরে এমন একজন আত্মীয় বা বন্ধুকে “ফ্যামিলি কন্টাক্ট” নির্ধারণ করুন এবং পরিবারের সবাই যেন ওই ব্যক্তির নাম, ঠিকানা এবং ফোন নম্বর জানে।
৬. স্থানীয় এবং জাতীয় জরুরি নম্বরগুলো হাতের কাছে রাখুন। আপনার নির্ধারিত সমাবেশ এলাকাটি আগেই ঠিক করে রাখুন।
ভূমিকম্পের সময় করণীয়-
১. শান্ত থাকার চেষ্টা করুন, আতঙ্ক ছড়াবেন না।
২. DROP – COVER – HOLD পদ্ধতি অর্থাৎ নিচে ঝুঁকে পড়ুন । মাথা থেকে গলা পর্যন্ত ঢেকে মজবুত আসবাবের নিচে আশ্রয় নিন। ঘাড়ের পেছনে দুই হাত রাখুন, মুখ–মাথা সুরক্ষিত করুন। ৬০ পর্যন্ত গণনা করুন—এটি মানসিকভাবে শান্ত রাখে এবং বেশিরভাগ ভূমিকম্প ৬০ সেকেন্ডের কম স্থায়ী হয়।
৩. বিপজ্জনক বস্তু যেমন কাঁচের জানালা,বুকশেলফ, আলমারি, ভারী আসবাব, ছাদের লাইট, ফ্যান বা ঝুলন্ত ফিটিংস থেকে দূরে থাকুন।
৪. ভবন, বিদ্যুতের খুঁটি, সেতু, গাছপালা থেকে দূরে থাকুন
৫. আশেপাশের ধসে পড়ার ঝুঁকি আছে এমন জায়গা এড়িয়ে চলুন
৬. সেতু, ওভারপাস বা ভবনের খুব কাছে গাড়ি থামাবেন না
৭. তাড়াহুড়া না করে নিকটবর্তী নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিন
ভূমিকম্প হওয়ার পরে করণীয়
১. নিজের ও অন্যের অবস্থা যাচাই করুন। ছোটখাটো আঘাত পেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিন
২. লিফট ব্যবহার করবেন না, সিঁড়ি ব্যবহার করুন এবং চিহ্নিত নির্গমন পথ ধরে সমাবেশ এলাকায় পৌঁছান
৩. দ্বিতীয় ধাপের ঝুঁকি যেমন ভাঙা কাঁচ, দেয়াল বা ছাদের অংশ ঝরে পড়া,আগুন লাগা, গ্যাস লিকেজ সম্পর্কে সতর্ক থাকুন
৪. আফটারশকের জন্য প্রস্তুত থাকুন
৫. ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে পুনরায় প্রবেশ করবেন না
৬. প্রয়োজনমতো প্রাথমিক চিকিৎসা দিন
৭. ঝুঁকি এড়ানোর ব্যবস্থা নিন
৮. সংবাদ ও সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করুন
জনস্বার্থে- বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী।



«
Next
This is the most recent post.
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply